🇫🇷 ফ্রান্সে পরিবারকে সঙ্গে আনা: ভারতীয় পরিবারের জন্য নির্দেশিকা

ফ্রান্সে কাজ বা পড়াশোনার জন্য আসা বহু ভারতীয়র সবচেয়ে বড় স্বপ্ন ও দুশ্চিন্তা একই জায়গায়—কখন এবং কীভাবে পরিবারকে এখানে আনা সম্ভব হবে? এই প্রক্রিয়াকেই বলা হয় “Regroupement Familial” (পারিবারিক পুনর্মিলন)।

এই গাইডে সহজ বাংলায় ব্যাখ্যা করা হলো, কারা আবেদন করতে পারবেন, কাদের আনা যাবে, কী কী কাগজপত্র লাগবে এবং পুরো ধাপগুলো কেমন। এর সঙ্গে থাকছে বাস্তব উদাহরণ ও ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতির বিশেষ নির্দেশনা।

✅ কারা আবেদন করতে পারেন?

• ন্যূনতম ১৮ মাসের বৈধ titre de séjour (আবাসিক অনুমতি) থাকতে হবে।

• রেসিডেন্স পারমিট এক বছরের বেশি মেয়াদি হতে হবে (salarié, vie privée et familiale, étudiant, entrepreneur ইত্যাদি)।

• আবেদন করার সময় পরিবার (স্বামী/স্ত্রী ও সন্তানরা) ফ্রান্সের বাইরে থাকতে হবে।

• আলজেরিয়ান নাগরিকদের জন্য সময়সীমা আলাদা (১২ মাস)।

👨‍👩‍👧 কাদের আনা যাবে?

• স্বামী বা স্ত্রী (ন্যূনতম ১৮ বছর বয়সী)।

• ১৮ বছরের কম বয়সী সন্তান (জৈবিক বা দত্তক সন্তান)।

📑 প্রক্রিয়া (Step by Step)

1. কাগজপত্র প্রস্তুত: পরিচয়পত্র, রেসিডেন্স পারমিট, আয়ের প্রমাণ, বাসস্থানের প্রমাণ।

2. আবেদন জমা: সরকারি পোর্টাল → sso.anef.dgef.interieur.gouv.fr

3. OFII যাচাই: নথি ঠিক থাকলে attestation de dépôt দেওয়া হবে।

4. বাড়ি পরিদর্শন: স্থানীয় Mairie অফিসার বাড়ি ও আয় যাচাই করবেন।

5. Prefecture সিদ্ধান্ত: সাধারণত ৬ মাস, কখনও দেরি হতে পারে।

6. ভিসা আবেদন: পরিবার ফ্রান্সের দূতাবাস/VFS অফিস থেকে।

7. ফ্রান্সে পৌঁছে: ভিসা ভ্যালিডেশন, সন্তানের জন্য DCEM, মেডিকেল চেকআপ ও ভাষা ক্লাস।

🧾 উদাহরণ: শ্রী প্রসান্ত শর্মার গল্প

প্রসান্ত শর্মা (উত্তর প্রদেশ) প্রথমে একাই ফ্রান্সে এসে কাজ করতেন। আয় ও বাসস্থান যথেষ্ট না থাকায় পরিবারকে আনতে পারেননি।

স্থায়ী চাকরি ও উপযুক্ত বাসা পাওয়ার পর তিনি regroupement familial-এর জন্য আবেদন করেন। প্রায় ১২ মাস পরে অনুমোদন আসে, এবং অবশেষে স্ত্রী ও সন্তানরা ফ্রান্সে আসতে সক্ষম হন।

👉 তাঁর অভিজ্ঞতা: “সবচেয়ে কঠিন ছিল অপেক্ষা ও বারবার নথি জমা দেওয়া। কিন্তু পরিবারকে কাছে পাওয়ার মুহূর্তটাই জীবনের সবচেয়ে আনন্দের।”

🎓 বিশেষ পরিস্থিতি

• Passeport Talent → গবেষক/উচ্চ দক্ষতাসম্পন্নদের জন্য সহজতর ব্যবস্থা। সরাসরি Passeport Talent – Famille ভিসা দেওয়া হয়।

• প্রবীণ বাবা-মা (৬০+) → স্থায়ী reunification নয়, তবে visitor visa, পর্যাপ্ত অর্থনৈতিক সামর্থ্য ও মেডিকেল ইন্স্যুরেন্স থাকলে ফ্রান্সে আনা যায়।

💶 আয় ও বাসস্থানের শর্ত

• ২–৩ জনের পরিবার → ন্যূনতম প্রায় ১,৮০১ € মাসিক আয়।

• ৪–৫ জনের পরিবার → প্রায় ১,৯৮২ € মাসিক আয়।

• বাসার আকার অঞ্চলভেদে ২২–২৮ মি² থেকে শুরু, প্রতিজনের জন্য অতিরিক্ত ১০ মি²।

📝 চূড়ান্ত পরামর্শ

• সব নথি traducteur assermenté (শপথিত অনুবাদক) দ্বারা ফরাসিতে অনুবাদ করান।

• প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ (৬–১৮ মাস)। ধৈর্য ধরুন।

• অসম্পূর্ণ আবেদন করলে ফাইল বন্ধ হয়ে যাবে।

• Prefecture-র অনুমোদনের পরেই পরিবারের ভিসার আবেদন সম্ভব।

উপসংহার

ফ্রান্সে পরিবারকে সঙ্গে আনা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া হলেও তা সম্পূর্ণ সম্ভব।
হাজারো ভারতীয় পরিবার ইতিমধ্যেই সফলভাবে প্রিয়জনদের ফ্রান্সে এনেছেন।

👉 তাই যদি আপনিও এই যাত্রায় থাকেন—তাহলে সঠিক তথ্য, ধৈর্য এবং প্রস্তুতিই হবে আপনার সবচেয়ে বড় শক্তি।

✍️ এই নিবন্ধটি বিশেষভাবে লেখা হয়েছে ফ্রান্সে প্রিয়জনকে সঙ্গে আনতে আগ্রহী ভারতীয় পরিবারের জন্য একটি সহজ নির্দেশিকা হিসেবে। আমরা আশা করি এটি আপনার যাত্রাকে সহজ করবে এবং সঠিক পথে এগোতে সাহায্য করবে।

Team L’Association Frehindi
(ভারতীয় প্রবাসীদের পাশে, সবসময়)

📣  (বালায়)

আপনারও কি পরিবারকে ফ্রান্সে আনার স্বপ্ন আছে? 🏡✈️
প্রিয়জনদের থেকে দূরে থাকা কঠিন, কিন্তু সঠিক তথ্য ও প্রস্তুতি থাকলে ফ্রান্সে পরিবারকে সঙ্গে আনা সম্ভব। আজই নিজের যোগ্যতা যাচাই করুন—আপনার রেসিডেন্স পারমিট, আয় ও বাসস্থানের শর্ত পূরণ হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করুন। প্রয়োজনীয় নথি সময়মতো প্রস্তুত করুন এবং সরকারি ওয়েবসাইট থেকে আপডেট তথ্য নিন।

👉 এই যাত্রায় আপনি একা নন। অনেক ভারতীয় পরিবার যেমন সফলভাবে regroupement familial প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফ্রান্সে একত্রিত হয়েছেন, আপনিও তা পারবেন।

L’Association Frehindi আপনার পাশে আছে নির্ভরযোগ্য তথ্য, অভিজ্ঞ পরামর্শ এবং ভারতীয় প্রবাসীদের সহায়তার জন্য।

🌐 ওয়েবসাইট:  www.frehindi.org
📧 ইমেল: haru@frehindi.com
📞 কল/WhatsApp: +91 98112 37050 | +91 95570 50195

👉 আজই প্রথম পদক্ষেপ নিন—আপনার পরিবারকে ফ্রান্সে আনার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে!